অনলাইন ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে নির্বাচন কমিশনের সম্মেলন কক্ষে এ সংলাপ শুরু হয়। বৃহস্পতিবারও এ সংলাপ হবে। সংলাপ শেষে বেরিয়ে এসে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অনেকেই বলেছেন, তারা আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ যাতে নিশ্চিত করা হয়, সেই বিষয়টির প্রতিই জোর দিয়েছেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি সংলাপে বলেছেন, আমাদের এখানে আইন-শৃঙ্খলা কন্ট্রোলের জন্য আমাদের পুলিশ, বিজিবি আছে, র্যাব আছে, আনসার ভিডিপি আছে। তারাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সক্ষম। যখন জাতীয় বিপর্যয় হয় তখনই কেবল সেনাবাহিনী আহ্বান করা দরকার। নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে আহ্বান করলে পুলিশ-র্যাব সাইডলাইনে চলে যাবে। তখন অবস্থা তেমন ভালো থাকবে না।
বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ভারতের নির্বাচন কমিশনের তুলনায় আইনগত দিক থেকে আমাদের কমিশন অনেক বেশি শক্তিশালী। আমরা বলেছি আপনারা শুধু মেরুদণ্ড সোজা করলেই হবে না, আপনাদের প্রকৃত ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, সাংবিধানিকভাবে আপনাদের যে ক্ষমতা আছে সেটির প্রয়োগ করে সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। যেহেতু কমিশন নির্বাচন আয়োজক সংস্থা সেহেতু সবার অংশগ্রহণের জন্য যে প্রক্রিয়া দরকার তাই করতে হবে।
তিনি অারো বলেন, সকল দলের অংশগ্রহণে কিভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা, সিভিল সোসাইটির ভূমিকাসহ কিভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু করা যায় তার ব্যবস্থাও করতে হবে কমিশনকে।
নঈম নিজাম বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সেনাবাহিনী থাকবে কি না, নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে সেনাবাহিনী প্রয়োজন তাহলে অবশ্যই সেনাবাহিনী ব্যবহার করবে।
সংলাপ শেষে দুপুরের বিরতি দিয়ে বেলা ৩টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ ব্যাপারে ব্রিফ করবেন।
সংলাপে কমিশন প্রণীত নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ উপস্থাপন করে এ বিষয়ে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের মতামত নেয়া হবে। তাদের পরামর্শ ও মতামতের ওপর ভিত্তি করে কমিশন আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য তাদের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপের আলোকেই সংলাপের এজেন্ডা বা কার্যপত্র তৈরি করা হয়েছে।
সংলাপে নির্বাচনী আইন ও বিধিমালা সংশোধন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন যুগোপযোগী করা, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়নে পরামর্শ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রম যুগোপযোগী করা বিষয়ে পরামর্শ, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নিরীক্ষা সংক্রান্ত প্রস্তাবনাসহ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে মতামত গ্রহণ সংলাপের এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কে এম নূরুল হুদা। এ ছাড়া চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। আজ ৩৪ জন গণমাধ্যমকর্মী ও সাংবাদিক নেতা সংলাপে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। তার মধ্যে ২২ জন অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আমন্ত্রিতদের মধ্যে যুগান্তরের সাইফুল আলম, মানবজমিনের মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রথম আলোর আনিসুল হক ও সোহরাব হাসান, ভোরের কাগজের শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নঈম নিজাম, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার বিভিন্ন টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইন গণমাধ্যমের ৩৭ জন প্রতিনিধির সঙ্গে সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।